দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ বছরের শেষ মানেই খ্রিস্টানদের সর্বশ্রেষ্ঠ উৎসব ক্রিসমাসের মরশুম। দুনিয়াব্যাপী জাঁকজমক করে পালিত হয় এই ফেস্টিভ্যাল। যিশু খ্রিস্টের জন্মদিবসটিকে ধুমধাম করে পালন করায় খ্রিস্টানদের সঙ্গে রীতিমতো পাল্লা দেন অন্য সব ধর্মের মানুষজন। ভারতে খ্রিস্টানরা সংখ্যালঘু হলেও তাঁদের এই উৎসবকে ঘিরে উন্মাদনা থাকে তুঙ্গে। বিশ্বের একাধিক দেশে হরেক রকম রীতি প্রচলিত রয়েছে এই বড়দিনের উৎসবকে ঘিরে।
বিশ্বের এক একটি দেশে ক্রিসমাস ফেস্টিভ্যালে পালিত হয় এক এক রকম নিয়মকানুনে।সাধারণত ক্রিসমাসের দিন খ্রিস্টানরা তাঁদের ঘরে ক্রিসমাস ট্রি সাজান। গোটা বাড়িও সাজিয়ে তোলা হয় নানা ডেকরেশনের মাধ্যমে। সাজসজ্জার সেই তালিকাতেই থাকে মিসলটোস গাছের পাতা। যা ঘরের অন্দরে লাগানো হয়। এই গাছের পাতাকে প্রেমের প্রতীক মানা হয়। এ ছাড়াও খ্রিস্টানরা মধ্য রাতে গির্জায় গিয়ে ক্যারল গান করেন। একে অপরকে উপহারও দিয়ে থাকেন তাঁরা।এছাড়াও ক্রিসমাসের রাতে অনেক দেশের শিশুরা গরম দুধ আর কুকিস একসঙ্গে একটি নির্দিষ্ট স্থানে রেখে দেয়। ছোটদের বিশ্বাস, সান্তাক্লজ এসে রাতে তাদের এই উপহার গ্রহণ করবে। ছোটরা আরও মনে করে, সান্তাক্লজ নর্থ পোলে থাকে আর প্রত্যেক বছর ক্রিসমাসে অনেক গিফট নিয়ে আসে। খ্রিস্টানরা বড়দিনে ঘর সাজিয়ে তোলেন। ক্রিসমাস ট্রিতে নানাবিধ ক্যান্ডিও ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। পরম্পরা অনুযায়ী, ঘরে অলংকারও সাজিয়ে রাখেন খ্রিস্টান নারীরা।অনেক দেশে গির্জায় প্রভু যিশুর জন্মের মুহূর্তকে রিক্রিয়েট করা হয়। অর্থাৎ অভিনয়ের মাধ্যমে উদযাপন করা হয় সেই মুহূর্ত। একটি ঘরে জোসেফ, মেরি এবং পরী সেজে শিশু যিশুর জন্মগ্রহণের মুহূর্ত নাটকের মাধ্যমে সেলিব্রেট করেন খ্রিস্টানরা।জার্মান খ্রিস্টানরা এই দিনটিতে একটি শোভাযাত্রা করেন। এতে অ্যাডাম এবং ইভের ফিস্ট ডে প্রদর্শিত হয়। সেই প্রদর্শনীতে স্বর্গের গাছে আপেল ঝোলানো হয়। এই কাহিনির সঙ্গে সান্তা ক্লজকেও জুড়ে দেওয়া হয়। স্লেজ গাড়িতে চেপে সান্তা ক্লজও এই প্রদর্শনীতে যোগ দেন।কোনও কোনও অংশে ক্রিসমাসের দিন যুব সম্প্রদায় এক জায়গা জড়ো হয়ে ক্যারলস গায়। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ক্রিসমাসের শুভেচ্ছা জানায় তাঁরা।অধিকাংশ দেশেই ক্রিসমাসের দিন ফ্রুটস কেক তৈরি করা হয়। এক অপরকে সেই কেক উপহার দেন খ্রিস্টানরা। গরিবদের মধ্যেও বিলি করা হয় সেই কেক। এ ছাড়াও পেস্ট্রি, কুকিজ তৈরি করা হয় বাড়ি বাড়ি।আবার কোনও কোনও দেশে ক্রিসমাসের দিন মিসটলটো গাছে নীচে প্রেমিকা-প্রেমিকা একে অপরের ঠোঁটে গভীর চুম্বন করেন। এই গাছটিতে ছোট ছোট সাদা ফল হয়। ক্রিসমাসের দিন এই গাছ নিজেদের ঘরেও নিয়ে আসেন খ্রিস্টানরা। এই গাছের পাতার নীচে চুম্বন করা
ক্রিসমাস ট্রিকে খ্রিস্টানরা জীবনের স্বার্থকতার প্রতীক মনে করেন। মনে করা হয়, মহারানি ভিক্টোরিয়া যখন ব্রিটেনের রাজাকে বিয়ে করেন, তখন থেকেই এই ট্রি সাজানোর প্রচলন শুরু হয়। খ্রিস্টানদের কাছে একটি পরম্পরা। এই নিয়ম পালন করলে খুব দ্রুতই প্রেমিকা-প্রেমিকার বিয়ের কথা পাকা হয়ে যায়। এমনটাই প্রচলিত রয়েছে খ্রিস্ট ধর্মে।