জলাভূমি
জলাভূমি হলো এমন একটি স্থান বা এলাকা, যার মাটি মৌসুমভিত্তিক বা স্থায়ীভাবে আর্দ্র বা ভেজা থাকে। রামসার কনভেনশন অনুযায়ী জলাভূমি বলতে বোঝায় নিচু ভূমি; যার পানির উৎস প্রাকৃতিক কিংবা কৃত্রিম; পানির স্থায়িত্বকাল সারাবছর কিংবা মৌসুমভিত্তিক; পানি স্থির কিংবা গতিশীল; স্বাদু, আধা-লবনাক্ত বা লবনাক্ত, এছাড়াও কম গভীরতাসম্পন্ন সামুদ্রিক এলাকা যার গভীরতা ৬ মিটারের কম ও অল্প স্রোতযুক্ত।[২]
প্রকারভেদ
[সম্পাদনা]সমস্ত পৃথিবী জুড়ে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের জলাভূমি,যেমন: মার্শ, মোহনা, কাদা-চর, ফেন্স, পকোসিন্স, সোয়াম্পস, ডেলটাস, প্রবাল দ্বীপ, বিলাবঙ্গস, লেগুন, অগভীর সমুদ্র, বগ (bogs), হ্রদ ইত্যাদি। বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রকারের জলাভূমির মধ্যে রয়েছে প্লাবনভূমি, নিচু জলা, বিল, হাওর, বাওর, জলমগ্ন এলাকা, উন্মুক্ত জলাশয়, নদীতীরের কাদাময় জলা, জোয়ারভাটায় প্লাবিত নিচু সমতলভূমি এবং লবনাক্ত জলাধার।[২]
গুরুত্ব
[সম্পাদনা]সাধারণত যেখানেই পানি, সেখানেই মাছের আবাস। তাই মৎস্যখাতে জলাভূমির গুরুত্ব অপরিসীম। সারা পৃথিবীর মোট আহরিত মাছের দুই তৃতীয়াংশ আসে জলাভূমি থেকে। তাছাড়া পানির রাসায়নিক উপাদান নিয়ন্ত্রণ ও অতিরিক্ত পুষ্টি উপাদান শোষণ করে পানির গুণাগুণ বৃদ্ধিতে সহায়তার মাধ্যমে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিসহ দুষিত পানি বিশুদ্ধকরণেও ভুমিকা রাখে। এছাড়াও বিপন্ন ও বিলুপ্তপ্রায় মৎস্য প্রজাতি সংরক্ষণেও সংরক্ষিত জলাভূমি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বর্ষার সময় অতিরিক্ত পানি ধারণ করে বন্যা নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে জলাভূমি। সাধারণত জলাভূমির পানির মধ্যে জলজ বাস্তুসংস্থানের প্রাথমিক খাদ্য উৎপাদক তৈরি হয়ে থাকে, যা ধারাবাহিক গতিতে জন্ম দেয় খাদ্যের অন্যান্য শৃঙ্খল। খাদ্য উৎপাদনশীলতার হিসাবে পৃথিবীর মোট উৎপাদনের ২৪% নিয়ন্ত্রণ করে থাকে জলাভূমি, যা মাছ ও অন্যান্য জলজ প্রাণীর প্রয়োজনীয় খাদ্যের প্রধান উৎস হিসেবে কাজ করে|এছাড়াও পৃথিবীর প্রায় ৩ বিলিয়ন মানুষের (যা মোট জনসংখ্যার অর্ধেক) প্রধান খাদ্য ভাত, যা আসে ধান থেকে আর এই ধানের বেশিরভাগই উৎপাদিত হয় জলাভূমিতে। পৃথিবীর শীতপ্রধান দেশগুলো থেকে প্রচন্ড শীতের হাত থেকে বাঁচার জন্য যেসব পরিযায়ী পাখিরা উষ্ণতর দেশগুলোতে আসে, তাদের প্রধান আশ্রয়স্থল হয় এইসব জলাভূমিগুলো।[২]
এসব ছাড়াও জলাভূমিতে জন্মানো নানাবিধ উদ্ভিদ রান্নার জ্বালানী হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কাগজ তৈরির উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে অনেক জলজ উদ্ভিদ। এছাড়াও পাট পঁচাতে এমনকি চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণের ক্ষেত্রেও জলাভূমি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। সহজ ও স্বল্পব্যয়ের যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে জলাভূমি ভূমিকা রাখে, বাংলাদেশের কাপ্তাই লেক এর উত্তম উদাহরণ।[২]
ব্যবহারিক এইসব গুরুত্ব ছাপিয়ে তাত্ত্বিক গুরুত্বের বিচারে বিবেচ্য যে, জলাভূমিকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে পৃথিবীর অনেক সভ্যতা ও সংস্কৃতি। এছাড়াও একটি দেশের পর্যটন শিল্প ও বিনোদনের একটা বড় কেন্দ্র বলা যায় এইসব জলাভূমিগুলো।[২]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২০১১-০৬-২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১০-০৮।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ "জলাভূমির গুরুত্ব" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৯ মে ২০১০ তারিখে, সৈয়দা নূসরাত জাহান, BdFish Bangla ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৮ আগস্ট ২০১১ তারিখে, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১০ খ্রিস্টাব্দ।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- Wetlands International - A non-profit global organisation to sustain and restore wetlands, their resources and biodiversity for future generations
- US Fish & Wildlife Service: National Wetlands Inventory
- Wetlands: The Ecological Effect of Loss (Research article)
- (ফরাসি)Pôle-relais zones humides littorales de la façade atlantique, Manche et Mer du Nord
- Marshlands of Iberá (in English and Spanish)
- Wetlands Water Quality Information Center, U.S. Department of Agriculture
- Centro Studi Naturalistici
- Wetlands legal updates
- Wetland of Hong Kong
- Forum des Marais Atlantiques - Pôle-relais zones humides littorales de la façade atlantique, Manche et Mer du Nord
এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |